৮ জুলাই ২০২৩ কলকাতার উপকণ্ঠে পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত বা স্থানীয় কোন নির্বাচনে নির্বাচন কেন্দ্রের বাইরে ভোটারদের লাইন পাহারা দিচ্ছেন এক আধাসামরিক জওয়ান (এ এফ পি / দিব্যাংশু সরকার)

ভারতে নির্বাচন ২০২৪: সাংবাদিক সুরক্ষা নির্দেশিকা

২০২৪ সালে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (ভাজপা) টানা তৃতীয় বার পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনে জিততে চাইছে। ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে ভারতের ষাট কোটির বেশি মানুষের বিশাল নির্বাচক মন্ডলী তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

সিপিজে-র ইমারজেন্সিস রেসপন্স টিম (ই আর টি) ভারতের নির্বাচনে প্রতিবেদনকারী সাংবাদিকদের জন্য একটি সুরক্ষা নির্দেশিকা রচনা করেছেন। এই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে সম্পাদক, সাংবাদিক ও চিত্র সাংবাদিকরা কীভাবে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেবেন এবং কীভাবে ডিজিটাল, শারীরিক ও মানসিক ঝুঁকি কমানো যাবে। 

ভারতে বিগত বেশ কিছু বছর যাবৎ সাংবাদিকদের ওপর অতিরিক্ত চাপ,  সেন্সর করার প্রচেষ্টা ও প্রতিবেদন নিয়ন্ত্রণ দেখা যাচ্ছে, বিশেষত যখন স্পর্শকাতর রাজনৈতিক বিষয় জড়িত থাকে। গত সাধারণ নির্বাচনের প্রবণতা ও গত পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে আর্মড কনফ্লিক্ট এন্ড লোকেশন ইভেন্ট ডেটা প্রজেক্ট (এ সি এল ই ডি) প্রদত্ত তথ্যের ভিত্তিতে দেখা যাচ্ছে শারীরিক নিগ্রহ, জনতার উত্তেজনা ও হিংসাত্মক বিক্ষোভ সমাবেশের কারণে সাংবাদিকদের আশঙ্কা বেড়েই চলেছে। সেই সঙ্গে সামাজিক মাধ্যমে ক্রমবর্ধমান ট্রোলিং, অনলাইন হয়রানি,  সাইবার গুন্ডামি (বুলিং) আর ডিজিটাল নজরদারির বিরুদ্ধে সাংবাদিকরা নিজেদের রক্ষা করতে বাধ্য হচ্ছেন। এই সম্মিলিত আক্রমণের কারণে  সংবাদকক্ষ ও গোটা মাধ্যমকে মানসিক পীড়ণ সহ্য করতে হচ্ছে।

 সূত্র:  আর্মড কনফ্লিক্ট লোকেশন এন্ড ইভেন্ট ডেটা প্রজেক্ট (এ সি এল ই ডি); www.acleddata.com

এ সি এল ই ডি তথ্যপঞ্জি একটা ঘটনা ভিত্তিক তথ্যপঞ্জি যাতে রাজনৈতিক হিংসা, বিক্ষোভের বিভিন্ন ঘটনা এবং গোটা বিশ্বের নির্বাচন সম্পর্কিত অহিংস ঘটনাসমূহ সন্নিবিষ্ট। এ সি এল ই ডি তথ্যপঞ্জি তাৎক্ষণিক সংগৃহীত তথ্য যা সাপ্তাহিক ভিত্তিতে প্রকাশ করা হয়। এই তথ্যপঞ্জিতে ঘটনার ধরণ, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগণ, স্থান, তারিখ এবং অন্যান্য বিশেষত্বের বিস্তারিত বিবরণ থাকে। এ সি এল ই ডি পদ্ধতি সম্পর্কে আরো বিশদ তথ্যের জন্য দয়া করে এ সি এল ই ডি কোড বুক  দেখুন।

তথ্য প্রদর্শনের পটভূমির কুনাল মজুমদার কৃত ব্যাখ্যা

সূত্র:  আর্মড কনফ্লিক্ট লোকেশন এন্ড ইভেন্ট ডেটা প্রজেক্ট (এ সি এল ই ডি); www.acleddata.com

 এ সি এল ই ডি তথ্যপঞ্জি ২০১৯ সালের সাধারণ নির্বাচন পর্যন্ত বেড়ে চলা রাজনৈতিক হিংসা, বিশেষত পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, পাঞ্জাব এবং জম্মু ও কাশ্মীর প্রদেশের ঘটনা তুলে ধরে। একই সঙ্গে, সেই সময়কার সি পি জে তথ্য ও সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন, সাংবাদিকদের প্রতি শারীরিক নিগ্রহ ও আক্রমণের বৃদ্ধি নির্দেশ করে। 

উদাহরণ স্বরূপ, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ছত্রিশগড়ে ভারতীয় জনতা দল (ভাজপা)-র তথাকথিত সমর্থকরা দলীয় কর্মীদের মধ্যে মারামারির দৃশ্য ক্যামেরাবন্দী করার জন্য এক  সাংবাদিকের উপর হামলা চালায়। .২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে তামিলনাড়ুতে ভারতের জাতীয় কংগ্রেস দলের তথাকথিত কিছু সমর্থক দলীয় নির্বাচনী সভায় খালি চেয়ারের ছবি তোলার জন্য এক চিত্র সাংবাদিকের উপর চড়াও হয়

 ৬ই মে, ২০১৯ তারিখে সংগৃহীত সিপিজে তথ্য অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গে সাংবাদিকদের ওপর আক্রমণ সহ বিভিন্ন ঘটনার সংখ্যা ভীতিজনক। ক্ষমতাসীন সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস ও বিরোধী ভাজপা দলের সমর্থকদের মধ্যে হিংসাত্মক সংঘর্ষ ঘটে বারাকপুরে। এইসব ঘটনার প্রতিবেদনকারী সাংবাদিকদের বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হয়, এমন কি তাদের গাড়ি লক্ষ্য করে পাথরও ছোড়া হয়। দুর্ভাগ্যবশত এই ধরনের আক্রমণ কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, একই দিনে পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলায় রাজনৈতিক সংঘর্ষের খবর করতে যাওয়া সাংবাদিকদের আক্রমণের মুখে পড়তে হয়।

এই ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি চলতেই থাকে যেখানে রাজনৈতিক হিংসার কারণে সাংবাদিকদের বারবার দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয় যাতে তাঁদের বস্তুনিষ্ঠ ও স্বাধীন কর্মপদ্ধতি ব্যাহত হতে থাকে।

এ সি এল ই ডি তথ্য অনুযায়ী পরবর্তী বছর গুলিতে উত্তর প্রদেশ, কর্ণাটক ও মনিপুর সহ ভারতের অন্য রাজ্যেও হাতাহাতির সংখ্যা বেড়ে যায়। মে ২০১৯ থেকে সংগৃহীত সিপিজে তথ্যেও দেখা যায় এই রাজ্যগুলিতে হিংসা ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। ২০১৯ থেকে নিহত ১১ জন সাংবাদিকের মধ্যে চারজন উত্তর প্রদেশে নিহত হন। ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে কর্ণাটকের হাসান জেলায় বেআইনি গোবধ কেন্দ্র সম্পর্কে খবর করার কারণে উত্তেজিত জনতা এক মহিলা সাংবাদিককে আক্রমণ করে। ২০২১ সালে সেপ্টেম্বর মাসে মহিশুরে দক্ষিণপন্থী প্রতিবাদীদের বক্তৃতা রেকর্ড করার কারণে এক সাংবাদিককে নিগৃহীত হতে হয়। সংবাদ  সংগ্রাহকদের ওপর  এই বেড়ে চলা আক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষত রাজনৈতিক উত্তেজনাপ্রবণ পরিবেশে সংবাদ প্রবাহ অক্ষুণ্ণ রাখতে এবং সাংবাদিকদের সততা বজায় রাখতে অতিরিক্ত মনোযোগ ও তৎপর পদক্ষেপ প্রয়োজন।

সুরক্ষা নির্দেশিকা সূচি:

প্রতিকূল পরিবেশে কর্মীকে পাঠাবার আগে সম্পাদকের সুরক্ষাবিধি তালিকা

প্রস্তুতি পর্ব থেকে নির্বাচন পর্যন্ত অনেক সময় সম্পাদক ও সংবাদকক্ষ সাংবাদিকদের দ্রুত ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে থাকে। কর্মীদের ঝুঁকি কমানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রশ্ন ও পদক্ষেপগুলি এই তালিকায় আছে।

  • আপনার কর্মী কি এই কাজের জন্য যথেষ্ট অভিজ্ঞ?
  • এই কাজের সময় বেড়ে যেতে পারে এমন কোন শারীরিক সমস্যা আপনার কর্মীর আছে কিনা সেই বিষয়ে আলোচনা করেছেন?
  • যত কর্মীকে নিয়োগ করা হচ্ছে তাঁদের সকলের জরুরিভিত্তিক যোগাযোগ কি নথিবদ্ধ করে সযত্নে সুরক্ষিত রেখেছেন?
  • সেই দলের কাছে কি যথাযথ স্বীকৃতি, সাংবাদিক ছাড়পত্র বা কোন চিঠি আছে যা থেকে বোঝা যায় যে তাঁরা আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য কাজ করেন?
  • আপনার দল যে ঘটনার সম্মুখীন হবে তার ঝুঁকির মাত্রার কথা কি বিবেচনা করেছেন? এই ঝুঁকির মাত্রা কি সম্পাদকের লাভের তুলনায় গ্রহণযোগ্য?
  • কর্মীদের অধিকতর সুরক্ষিত করতে সম্ভাব্য ঝুঁকি ও তার প্রতিকার বিশদে লিপিবদ্ধ করুন (প্রয়োজন হলে অন্য একটি কাগজে লিখে তাঁদের সঙ্গে দিন) 
  • কোন নিয়োজিত সাংবাদিকের ভূমিকা কি বেশি বিপদজনক? (উদাহরণ স্বরূপ, চিত্র সাংবাদিক যাঁরা ঘটনার খুব কাছাকাছি কাজ করেন বা মহিলা সাংবাদিক) যদি হয়, বিশদে জানান
  • কোন বিশেষ উপকরণ যেমন বর্ম, বিষাক্ত গ্যাসরোধী মুখোশ বা চিকিৎসা সরঞ্জাম কি প্রয়োজন? সাংবাদিকদের কি সেই প্রয়োজনীয় উপকরণ আছে এবং তাঁরা কি তাদের ব্যবহার বিধি সম্পর্কে অভিহিত?
  • সাংবাদিকরা কি নিজে গাড়ি চালাবেন আর যদি তাই হয় তবে তাদের গাড়ি কি পথের জন্য উপযুক্ত ও যথাযথ?
  • আপনি কি নির্ধারণ করেছেন কেমন করে আপনার দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন এবং কীভাবে প্রয়োজনে তাঁরা ঘটনাস্থল থেকে সরে যাবেন? যদি করে থাকেন, বিশদে লিখুনঃ
  • কেউ আহত হলে কাছাকাছি কোথায় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যাবে তা কি নির্ধারণ করেছেন? যদি করে থাকেন, নথিবদ্ধ করুন।
  • দলটি কি সঠিকভাবে বিমাকৃত এবং আপনি কি যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা রেখেছেন?
  • আপনি কি দীর্ঘমেয়াদী মানসিক আঘাতজনিত সমস্যার সম্ভাবনার কথা বিবেচনা করেছেন?

ঝুঁকির পরিমাপকরণ ও পরিকল্পনা সম্পর্কে আরো তথ্যের জন্য সিপিজে রিসোর্স সেন্টার দেখুন।

 ডিজিটাল সুরক্ষা: মূলকথা

অনলাইন কাজ করার সময় ও যন্ত্রপাতি ব্যবহারের সময় অধিক নিরাপদ থাকার জন্য ডিজিটাল সুরক্ষার মূল বিষয়গুলি জানা গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন সম্পর্কে প্রতিবেদনকারী সাংবাদিকদের জন্য নিম্নলিখিত অনুশীলনগুলি সবচেয়ে ভালঃ

 আপনার অ্যাকাউন্টগুলি সুরক্ষিত করুন
  • আপনার অ্যাকাউন্টগুলি হ্যাকিং এর বিরুদ্ধে রক্ষা করতে সব অনলাইন অ্যাকাউন্টে দ্বিমাত্রিক প্রমাণিকরণের ব্যবস্থা করুন (২ এফ এ) । এস এম এস-এর বদলে অথির মতো প্রমাণিকরণকারী অ্যাপ ব্যবহার করুন।
  • ২ এফ এ সম্বলিত প্রতিটি অ্যাকাউন্টের ব্যাকআপ কোড লিখে রাখুন যাতে প্রমাণিকরণকারী অ্যাপের সংযোগ হারিয়ে গেলেও আপনি অ্যাকাউন্টগুলিতে প্রবেশ করতে পারেন।
  • নিয়ম মেনে নিরাপদ পাসওয়ার্ড তৈরি করুন। যেমন, প্রতিটি অ্যাকাউন্টের জন্য আলাদা পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন, ১৫-র বেশি অক্ষর সম্বলিত পাসওয়ার্ড তৈরি করুন এবং আপনার পাসওয়ার্ড গুলিতে আপনার কোন ব্যক্তিগত তথ্য না থাকা নিশ্চিত করুন।
  • আপনার অ্যাকাউন্টগুলি নিয়মিত দেখুন এবং কোন ভাবে অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা হলে যে বিষয়গুলি আপনি প্রকাশ করতে চান না তার ব্যাক আপ রাখুন আর মুছে ফেলুন।
  • নিয়মিত আপনার অ্যাকাউন্টে “অ্যাকাউন্ট অ্যাক্টিভিটি” অংশটিতে লক্ষ্য রাখুন। আপনার অচেনা কোন যন্ত্র লগ ইন করা থাকলে আপনার উচিত সেই যন্ত্র থেকে লগ আউট করা।
 ফিশিং-এর বিরুদ্ধে আরো ভালো সুরক্ষা
  • সাধারণত নির্বাচনের সময় ফিশিং বেড়ে যায়। কায়দা করে কোন ওয়েবসাইটে স্পর্শকাতর তথ্য দিতে আপনাকে বাধ্য করতে ফিশিং বার্তা ব্যবহার করা যায় অথবা তাতে এমন লিঙ্ক বা ডাউনলোড থাকে যাতে একবার ক্লিক করলেই ক্ষতিকর ম্যালওয়ার আপনার যন্ত্রকে আক্রমণ করতে পারে।
  • কোন বার্তা আপনাকে দ্রুত কিছু করার জন্য উৎসাহিত করলে বা অসম্ভব ভাল কিছু দিতে চাইলে সেটি সম্পর্কে সতর্ক থাকুন।
  • প্রেরক ও বার্তার বিষয় সম্পর্কে বিশদে পরীক্ষা করে দেখুন সেগুলি বৈধ কিনা। বানান, ব্যাকরণ, গঠন বা স্বরে সামান্য পরিবর্তন বোঝাতে পারে যে অ্যাকাউন্ট প্রতারণার শিকার হয়েছে বা হ্যাক করা হয়েছে।
  • কোন বার্তা সন্দেহজনক হলে বা তাতে অপ্রত্যাশিত কিছু থাকলে অন্য কোন উপায়ে, যেমন ফোন করে, প্রেরকের সঙ্গে যোগাযোগ করে সেটি যাচাই করুন।
  • কোন বার্তা আপনার পরিচিত কারো থেকে এসেছে মনে হলেও কোন লিংক-এ ক্লিক করার আগে সাবধানে চিন্তা করুন। আপনার  কারসারটিকে লিংক-এর  উপর ধরে রেখে দেখুন ইউ আর এল বৈধ মনে হচ্ছে কিনা।
  • ইমেইল মাধ্যমে কোন সংলগ্ন বার্তা (অ্যাটাচমেন্ট) পেলে আগে সেটি খুলে দেখুন। ডাউনলোড না করলে ম্যালওয়ার প্রবেশ করবে না। যদি সন্দেহ হয় প্রেরককে ফোন করে বলুন বিষয়টি ইমেইলে কপি করে পাঠাতে অথবা ডাউনলোড না করে দৃশ্যমান নথিটির স্ক্রিনশট নিয়ে নিন।

 আরো বিশদ তথ্যের জন্য সিপিজের ডিজিটাল সুরক্ষা নির্দেশিকা পড়ুন।

 ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধীকে শুক্রবার সংসদ থেকে বহিষ্কার করার পর ২৪ মার্চ, ২০২৩ দিল্লিতে তাঁর বসত বাড়ির সামনে পুলিশ ও সংবাদ মাধ্যমের জমায়েত। রয়টার / অনুশ্রী ফড়নবিশ

ডিজিটাল সুরক্ষাঃ মূল যন্ত্র প্রস্তুতি

 নির্বাচনকালীন প্রতিবেদনের সময় খবর পাঠাতে, ঘটনার বিবরণ নথিবদ্ধ করতে বা সহকর্মী ও সূত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সাংবাদিকরা তাঁদের মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারেন। যদি সাংবাদিকদের আটকে রাখা হয় আর তাঁদের ফোন আটক করা হয় বা ভেঙ্গে ফেলা হয় তবে ডিজিটাল সুরক্ষার বিষয়টি এসে পড়ে। নিউজ রুম (সংবাদকক্ষ) হানা দেওয়ার ঘটনাও ঘটতে পারে যাতে কম্পিউটার সহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি আটক করা হতে পারে।

নিজেকে অধিকতর সুরক্ষা দিতেঃ

  • কী কী তথ্য আপনার ফোনে বা কম্পিউটারে আছে এবং আপনাকে আটক  করা হলে ও আপনার যন্ত্র নিয়ে তল্লাশি করা হলে সেই সব তথ্য কীভাবে আপনাকে বা অন্যদের বিপদে ফেলতে পারে সে ব্যাপারে অবহিত থাকুন।
  • খবর সংগ্রহে বার হওয়ার আগে কোন হার্ড ড্রাইভে আপনার ফোনের ব্যাক আপ রাখুন এবং আপনার সঙ্গে থাকা ফোন থেকে স্পর্শকাতর ও ব্যক্তিগত তথ্য যেমন পারিবারিক ছবি সরিয়ে ফেলুন বা সেগুলিতে প্রবেশাধিকার সীমাবদ্ধ করুন।
  • প্রতিবেদনের সময় যে সব অ্যাকাউন্ট বা অ্যাপ আপনি ব্যবহার করবেন না সেগুলি থেকে লগ আউট করুন এবং আপনার ফোন থেকে সেগুলি সরিয়ে ফেলুন। সব ব্রাউজার থেকে লগ আউট করুন এবং ব্রাউজিং ইতিহাস মুছে ফেলুন। এতে আপনার ফোন নিয়ে নেওয়া হলে ও তল্লাশি করা হলে আপনার অ্যাকাউন্টগুলি অনুপ্রবেশ থেকে সুরক্ষিত থাকবে।
  • আপনার সব যন্ত্র পাসওয়ার্ড দ্বারা সুরক্ষিত রেখে এবং সেগুলিকে রিমোট ওয়াইপ-এ রেখে খবর সংগ্রহে বেরোন। ইন্টারনেট সংযোগ থাকলে তবেই রিমোট ওয়াইপ কাজ করবে। ফোন আনলক করতে আঙুলের ছাপের মতো বায়োমেট্রিক এড়িয়ে চলুন যাতে আপনি আটক হলে যন্ত্রটি ব্যবহার করা সহজ না হয়।
  • নিজের সঙ্গে যত কম সম্ভব যন্ত্র রাখুন। যদি আপনার কোন অতিরিক্ত যন্ত্র থাকে তবে ব্যক্তিগত ও কর্ম ক্ষেত্রের যন্ত্র রেখে সেটিই ব্যবহার করুন।
  • আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোনে এনক্রিপশন চালু রাখার কথা মাথায় রাখুন। নতুন আইফোনগুলিতে এনক্রিপশন-কেই সাধারণ মান করা হয়েছে। এনক্রিপশন ব্যবহার সম্পর্কে আইন দেখে রাখুন।
  • যেখানে সম্ভব সহকর্মী ও সূত্রের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য এন্ড টু এন্ড এনক্রিপ্টেড মেসেজিং সার্ভিসেস, যেমন সিগন্যাল, ব্যবহার করুন। বার্তাগুলি একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার পর মুছে যাওয়ার ব্যবস্থা রাখুন।
  • ব্লক হয়ে যাওয়া সাইট ব্যবহারে সাহায্যের জন্য একটি ভি পি এন স্থাপন (ইনস্টল) করুন। ভি পি এন ব্যবহার সম্পর্কিত আইন অধ্যয়ন করুন এবং খোঁজ নিন ইন্টারনেট পরিষেবা আংশিক ব্যাহত হলে কোন ভি পি এন  সরবরাহকারী সবচেয়ে ভাল কাজ করে।
  • ইন্টারনেট পরিষেবা সম্পূর্ণ বন্ধ থাকলে কীভাবে ও কখন অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন তা পরিকল্পনা করে রাখুন।
  • কার্যালয়ে হানা পড়লে কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন তা পরিকল্পনা করে রাখুন এবং সংবাদকক্ষের কম্পিউটারগুলিতে থাকা তথ্যসমূহের সুরক্ষা সুনিশ্চিত করুন।
  • আপনার সংবাদকক্ষে থাকা তথ্যগুলির একাধিক নকল রাখুন। সবচেয়ে ভাল হয় যদি একটি কপি কার্যালয়ের বাইরে এমন কোন জায়গায় রাখা যায় যা সংবাদকক্ষের সঙ্গে যুক্ত নয়।
  • ব্যাক আপ তথ্য এনক্রিপ্ট করে রাখা একটি ভাল পদ্ধতি। আপনার বহিঃস্থ হার্ড ড্রাইভ বা ফ্ল্যাশ ড্রাইভ এনক্রিপ্ট করে রাখার মাধ্যমে আপনি তা করতে পারেন। আপনার যন্ত্রগুলিতে এনক্রিপশন চালু করেও রাখতে পারেন। এনক্রিপশন ব্যবহারের বৈধতা সম্পর্কে আপনার সম্যক জ্ঞান সুনিশ্চিত করুন।

 ডিজিটাল সুরক্ষাঃ স্পাইওয়ার ও ডিজিটাল নজরদারি

সিটিজেন ল্যাব ও সি পি জে সাক্ষাৎকার সমূহের গবেষণা অনুযায়ী ভারতের সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে পেগাসাস সহ অন্যান্য সমণ্বিত স্পাইওয়ার অভিযান ব্যবহারের অভিযোগ আছে। আপনার ফোনে একবার স্থাপন করা হলে পরিশীলিত স্পাইওয়ার এনক্রিপটেড বার্তা সহ সব কার্যকলাপের ওপর নজরদারি করতে পারে। ইজরায়েল ভিত্তিক এন এস ও গোষ্ঠী বলে যে নজরদারির উপকরণ হিসেবে পেগাসাস  বিক্রয় করা হয় শুধুমাত্র সরকার সমূহের কাছে, আইন প্রয়োগের জন্য এবং তারা সিপিজে-কে বার বার বলেছে যে তদন্ত প্রতিবেদন অনুসারে তাদের পণ্য চুক্তিভঙ্গ করে অপব্যবহার করা হয়েছে।

আপনার যন্ত্রসমূহের অধিক সুরক্ষার জন্য এই পদক্ষেপগুলি গ্রহণ করুনঃ 

  • অ্যাপল যন্ত্র যা আই ও এস ১৬ বা ১৭ দ্বারা চলে, তাদের মধ্যে স্পাইওয়ার প্রতিরোধী অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থা থাকে যার নাম লকডাউন মোড। যেসব অ্যাপল ব্যবহারকারীর এই পরিচালন পদ্ধতির সুবিধা আছে তাদের এটি চালু করে রাখা উচিত যাতে তাদের যন্ত্রগুলি স্পাইওয়ার-এর বিরুদ্ধে সুরক্ষিত থাকে। এটিকে সক্রিয় করতে আপনার যন্ত্রটি বন্ধ করে আবার চালু করা প্রয়োজন।
  • এন্ড্রয়েড ফোনে এই অভ্যন্তরীণ স্পাইওয়ার প্রতিরোধী ব্যবস্থা থাকে না, তাই যে সাংবাদিকদের স্পাইওয়ার আক্রমণের অত্যধিক ঝুঁকি থাকে তাদের যন্ত্র গুলিতে নিয়মিত ফ্যাক্টরি রিসেট করা প্রয়োজন। এর ফলে ফোন সম্পূর্ণ স্পাইওয়ার মুক্ত হওয়ার নিশ্চয়তা থাকে না। তবু, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জুলাই ২০২১-এ উল্লেখ করেছে যে যন্ত্র রিবুট করলে পেগাসাস সম্ভবত দূর হয়ে যায়।

যদি আপনার মনে হয় আপনার যন্ত্রে স্পাইওয়ার বাসা বেঁধেছেঃ

  • অবিলম্বে যন্ত্রটি ব্যবহার করা থামিয়ে সেটি বন্ধ রাখুন এবং সেটি এমন জায়গায় রাখুন যেখানে ক্যামেরা বা মাইক্রোফোনে আপনার ব্যক্তিগত গতিবিধি যথাসম্ভব কম ধরা পড়বে। জায়গাটি হবে আপনার কর্মক্ষেত্র বা কোন স্থান যেখানে আপনি অনেকটা সময় কাটান সেখান থেকে দূরে, যেমন আপনার শয়নকক্ষ।
  • সব অ্যাকাউন্ট থেকে লগ আউট করুন এবং সেগুলি আপনার যন্ত্র থেকে বিযুক্ত করুন।
  • অন্য একটি যন্ত্র থেকে আপনার সব অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড বদল করুন।

পেগাসাস স্পাইওয়ার সম্পর্কে আরো পড়ুন আমাদের অ্যাডভাইসারিতে

ডিজিটাল সুরক্ষাঃ ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ

নির্বাচনের সময় ইন্টারনেট পরিষেবা সম্পূর্ণ বা আংশিক বন্ধ থাকার সম্ভাবনা বেড়ে যায় এবং তাতে কর্মরত সাংবাদিকদের ওপর গভীর প্রভাব পড়ে। ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ বা সীমাবদ্ধ থাকলে সাংবাদিকরা সূত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন না, তথ্য যাচাই করতে বা ঘটনা নথিবদ্ধ করতে পারেন না। ভারতে ইন্টারনেট পরিষেবা সম্পূর্ণ বা আংশিক বন্ধ থাকা ও সংবাদমাধ্যমের ওপর তার প্রভাব সিপিজে নথিভুক্ত করেছে।

বন্ধ থাকার প্রভাব নিয়ন্ত্রণ করতে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি গ্রহণ করুনঃ

  • সম্পূর্ণ বন্ধ থাকলে কী করবেন সে ব্যাপারে সংবাদকক্ষ ও আপনার সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে একটা পরিকল্পনা করুন। পরিকল্পনা করুন কোথায় ও কখন ব্যক্তিগতভাবে দেখা করে কীভাবে ইন্টারনেট ছাড়াই তথ্য নথিভুক্ত করবেন ও সম্পাদককে পাঠাবেন। ল্যান্ডলাইন ফোনের নম্বর একে অন্যের কাছে রাখার কথা ভাবুন কিন্তু মনে রাখবেন ল্যান্ডলাইন যোগাযোগ নিরাপদ নয় এবং স্পর্শকাতর বিষয়ে কথাবার্তার জন্য মোটেই ব্যবহার্য নয়। যে অঞ্চলে পরিষেবা বন্ধ হওয়ার প্রভাব পড়তে পারে সেখানে সম্ভাব্য বসবাসকারী বা কর্মরত সহকর্মীকে কীভাবে সহায়তা করবেন তা পরিকল্পনা করে রাখুন। 
  • পরিষেবা বন্ধ হওয়ার আগে প্রয়োজনীয় নথি ও বিষয়বস্তু মুদ্রিত করে রাখুন।
  • পরিষেবা বন্ধের সময় তথ্য সংরক্ষণের জন্য কর্মীদের ইউ এস বি যন্ত্র বা সিডি দিয়ে রাখুন।
  • আংশিক ব্যাহত থাকার সময় ব্লক থাকা সাইট-এ ঢুকতে আগে থেকেই ভিপিএন পরিষেবা ডাউনলোড করে চালু করে রাখুন। ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলি বার বার ভিপিএন ব্লক করে দেয়, তাই একাধিক উপলব্ধ বিকল্প রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ইন্টারনেট পরিষেবা সম্পূর্ণ বন্ধ থাকলে ভিপিএন আপনাকে সাহায্য করবে না।
  • অন্যদের সঙ্গে একাধিক উপায়ে যোগাযোগের ব্যবস্থা রাখুন। যোগাযোগের বিভিন্ন অ্যাপ ডাউনলোড করে স্থাপন করা থাকলে একটি পরিষেবা বন্ধ থাকলে অন্যটি ব্যবহার করতে পারবেন । মনে রাখবেন, অ্যাপগুলির নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে । উদাহরণ স্বরূপ কিছু পরিষেবার ক্ষেত্রে এনক্রিপশন সদা সক্রিয় থাকে না, তা সক্রিয় করতে হয় । ইন্টারনেট বন্ধ থাকার সময় আপনি এস এম এস জাতীয় কোন অসুরক্ষিত মাধ্যমে যোগাযোগ করতে বাধ্য হতে পারেন, তাই কীভাবে স্পর্শকাতর তথ্য আদানপ্রদান করবেন সে ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। 
  • জেনে নিন কীভাবে ব্লুটুথ, ওয়াইফাই ডাইরেক্ট আর নিয়ার ফিল্ড কমিউনিকেশন (এন এফ সি) ব্যবহার করে তথ্য আদান প্রদান করতে পারেন । এই সব পদ্ধতির মাধ্যমে তথ্য প্রেরণ করার জন্য আপনার ফোনটিকে অন্য একটি ফোনের সঙ্গে পেয়ার করতে হয় এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না । আপনার ফোনের সেটিং অংশে সাধারণত এগুলি পাওয়া যায় । ইন্টারনেট বন্ধ হওয়ার আগে এগুলি ব্যবহার করা অভ্যাস করুন এবং নথি আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে এগুলি সীমাবদ্ধতা জেনে রাখুন ।
  • সরাসরি সংবাদ প্রেরণ কঠিন হলেও যা ঘটছে তা আপনি নথিভুক্ত করে রাখতে পারেন । ইউএসবি বা সিডি ব্যবহার করুন –  সম্ভব হলে এনক্রিপটেড – যাতে তথ্য মজুত থাকবে এবং সহকর্মী ও সম্পাদকদের সেগুলি হাতে হাতে দিন । মনে রাখবেন, এই উপকরণগুলিতে রাখা তথ্য এনক্রিপটেড না থাকলে আপনাকে আটক করা হলে কর্তৃপক্ষ সেগুলি জেনে যেতে পারেন । 

ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকা সম্পর্কে আরো তথ্যের জন্য সিপিজে-র গাইড পড়ুন ।

৬ আগস্ট, ২০২৩ বান্দিপোরা-তে একজন ভারতীয় সৈনিক ওয়াসিম আহমেদ-এর অন্তিম সরকার অনুষ্ঠানে ভারতীয় সেনা জওয়ানদের পাশে এক গ্রামবাসী মোবাইল ফোনে ছবি তুলছেন । তওসিফ মুস্তাফা / এএফপি

ডিজিটাল সুরক্ষাঃ অনলাইন হয়রানি ও উদ্দিষ্ট অনলাইন প্রচার

উদ্দিষ্ট অনলাইন প্রচার সহ অনলাইন হয়রানি নির্বাচনের সময় বেড়ে যেতে পারে। অনলাইন আক্রমণকারীরা, যারা সাংবাদিকদের ও তাঁদের কাজকে কলঙ্কিত করতে চান, প্রায়ই সংবাদ মাধ্যম কর্মীদের নিশানা করেন। প্রায়ই হয়রানি ও অপপ্রচার চলতে থাকে যাতে কোন সাংবাদিক সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার না করতে পেরে অফলাইন থাকতে বাধ্য হন। বিশেষত মহিলা সাংবাদিকগণকে নিশানা করা হয় এবং তাঁরা নারীবিদ্বেষী ও হিংসাত্মক যৌন হয়রানির শিকার হন। ভারতে মহিলা সাংবাদিকদের প্রতি এই ধরনের হয়রানির বেশ কিছু ঘটনা সিপিজে নথিভুক্ত করেছে। অনলাইন আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া সহজ নয়। তবু, কিছু পদক্ষেপ সাংবাদিকরা নিতে পারেন যাতে তাঁরা নিজেদের ও তাঁদের অ্যাকাউন্টগুলিকে রক্ষা করতে পারেন।

 নিজেকে আরো ভালোভাবে রক্ষা করতে

  • গবেষণা করে দেখুন যে ধরনের ঘটনার প্রতিবেদন করতে যাচ্ছেন তার পরিণাম কি অনলাইন হয়রানি হতে পারে।
  • অনলাইন অ্যাপ ব্যবহারকারীরা আপনার অ্যাকাউন্টগুলি হ্যাক করতে পারে। এই নির্দেশিকার গোড়ায় দেওয়া অনুশীলনগুলির মাধ্যমে আপনার অনলাইন অ্যাকাউন্টগুলি সুরক্ষিত করুন।
  • আক্রমণকারীরা অনলাইনে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য সম্পর্কে খোঁজ করতে পারে এবং সেই তথ্যগুলি আপনাকে হয়রান করতে, ভয় দেখাতে বা হুমকি দিতে ব্যবহার করতে পারে। এর মধ্যে ডক্সিং থাকতে পারে যখন আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, যেমন আপনার বাড়ির ঠিকানা, আপনার ক্ষতিসাধনের জন্য অনলাইন পোস্ট করা হয়। নিশ্চিতভাবে অনলাইনে লক্ষ্য রাখুন এবং যে সব তথ্য থেকে কেউ আপনার ক্ষতি করতে পারে তা সরিয়ে ফেলুন।
  • আপনার প্রতিটি অ্যাকাউন্টের গোপনীয়তা বিন্যাস (প্রাইভেসি সেটিংস) পর্যালোচনা করুন এবং যেখানে সম্ভব ব্যক্তিগত তথ্য যেমন ফোন নম্বর, জন্মতারিখ ইত্যাদি সরিয়ে ফেলুন। পরীক্ষা করুন কে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য সমাজ মাধ্যমে দেখতে পারে এবং আপনার গোপনীয়তা বিন্যাস মজবুত করুন।
  • আপনার অ্যাকাউন্টগুলি খতিয়ে দেখুন এবং যে কোন ছবি (ফটো বা ইমেজ) যা কেউ কাজে লাগাতে পারে বা আপনাকে অসম্মান করতে ব্যবহার করতে পারে, তা সরিয়ে ফেলুন বা গোপন করুন। ট্রোল-রা সাধারণত এই কৌশল অবলম্বন করে থাকে।
  • যদি সম্ভব হয়, পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে অনলাইন হয়রানি নিয়ে কথা বলুন। অপব্যবহারকারীরা সাংবাদিকদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে প্রায়ই তাঁদের আত্মীয় পরিজনদের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে। অন্যদের বলুন আপনার ছবি তাঁদের সাইট থেকে সরিয়ে ফেলতে বা তাঁদের অ্যাকাউন্ট লক করে রাখতে।
  • ভেবে দেখুন ডক্সিং-এর ক্ষেত্রে নিজেকে রক্ষা করতে কী কী পদক্ষেপ নেবেন। আপনার সমাজ মাধ্যম মারফত অনলাইন হয়রানির বিষয়ে কথা বলুন এবং ট্রোলিং গুরুতর হলে কী সুবিধাজনক ব্যবস্থা নেবেন তার পরিকল্পনা করে রাখুন।

আক্রমণের সময়ঃ

  • অনলাইন হয়রানিকারীদের সঙ্গে যুদ্ধে জড়াবেন না, কারণ তাতে পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে।
  • যদি সম্ভব হয় আপনার সব অ্যাকাউন্ট ব্যক্তিগত (প্রাইভেট) করে রাখুন এবং হয়রানি থিতিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অফলাইন থাকুন।
  • পরীক্ষা করুন আপনার সব অ্যাকাউন্টে ২ এফ এ চালু আছে কিনা এবং প্রত্যেক অ্যাকাউন্টের অনন্য ও দীর্ঘ পাসওয়ার্ড আছে কি না।
  • উদ্বেগজনক কোন মন্তব্য বা ছবি নথিভুক্ত করুন, যেমন হয়রানির স্ক্রিনশট, সময়, তারিখ এবং ট্রোল-এর সমাজমাধ্যম হ্যান্ডল। এই তথ্য ভবিষ্যতে কাজে লাগতে পারে যদি আপনার সংবাদ সংস্থা, সম্পাদক, মত প্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে লড়াই করা কোন সংগঠন বা কোন যথাযথ কর্তৃপক্ষকে তা দেখাতে হয়।
  • আপনার পরিবার, সহকর্মী ও বন্ধুদের জানান যে আপনি হয়রানির শিকার হয়েছেন। শত্রুরা আপনার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বা আপনার কর্মক্ষেত্রে যোগাযোগ করে আপনার সম্মানহানি করার চেষ্টায় তথ্য বা ছবি পাঠাতে পারে।
  • অনলাইন হয়রানি একটি বিচ্ছিন্ন অভিজ্ঞতা হতে পারে। আপনাকে সাহায্য করার জন্য একটি সহায়ক নেটওয়ার্ক থাকা নিশ্চিত করুন। সবচেয়ে ভাল হয় যদি আপনার নিয়োগকর্তা তাতে সামিল থাকেন।

 অনলাইন হয়রানির বিরুদ্ধে নিজেকে রক্ষা করা সম্পর্কে আরো বিশদ তথ্যের জন্য সিপিজে-র রিসোর্সেস ফর প্রোটেকটিং এগেইনস্ট অনলাইন অ্যাবিউজ পড়ুন।

শারীরিক সুরক্ষাঃ সমাবেশ ও প্রতিবাদ সভার খবর করার সময় সুরক্ষা বিধি

 নির্বাচনের সময় সাংবাদিকদের প্রায়ই সমাবেশ, প্রচার সভা, সরাসরি সম্প্রচার বা প্রতিবাদের সময় ভিড়ের মধ্যে কাজ করতে হয়।

 ঝুঁকি কমানোর জন্য:

রাজনৈতিক ঘটনা ও সমাবেশ
  • আপনার কাছে সঠিক স্বীকৃতি বা সাংবাদিক পরিচয় পত্র থাকা নিশ্চিত করুন। স্বাধীন সাংবাদিকদের জন্য নিয়োগকর্তার চিঠি থাকা বাঞ্ছনীয়। সেটি প্রকাশ্যে রাখা নিরাপদ হলে তবেই রাখুন। দড়ি দিয়ে গলায় ঝুলিয়ে না রেখে বেল্টের সঙ্গে ক্লিপ করে রাখুন।
  • জনতার মেজাজ নিরূপণ করুন। যদি সম্ভব হয় ঘটনাস্থলে আগে থেকে থাকা সাংবাদিকদের ফোন করে জানুন মেজাজ কেমন। যদি প্রয়োজন হয় সঙ্গে আর একজন সাংবাদিক বা চিত্রগ্রাহক রাখুন।
  • সংবাদ মাধ্যম সংস্থার ছাপ দেওয়া পোশাক পড়বেন না এবং প্রয়োজন হলে যন্ত্রপাতি / গাড়ি থেকে সংবাদমাধ্যমের লোগো সরিয়ে ফেলুন। যথাযথ জুতো পড়ুন।
  • পরিস্থিতি প্রতিকূল হলে পলায়ন কৌশল কী হবে তা ঠিক করে রাখুন। পৌঁছেও সেই পরিকল্পনা করতে পারেন কিন্তু কাজ শুরুর আগেই তা করে ফেলুন। আপনার গাড়ি একটি নিরাপদ স্থানে রাখুন অথবা পরিবহনের নিশ্চিত উপায় স্থির করে রাখুন।
  • পরিবেশ প্রতিকূল হলে ঘটনাস্থলের আশেপাশে ঘোরাঘুরি করবেন না এবং মানুষকে প্রশ্ন করতে শুরু করবেন না।
  • যদি বাইরে থেকে প্রতিবেদন করা উদ্দেশ্য হয় তবে একজন সহকর্মীর সঙ্গে কাজ করা ভাল। একটি নিরাপদ স্থান থেকে প্রতিবেদন করুন যেখানে অনবরুদ্ধ প্রস্থান পথ আছে এবং আপনার পরিবহন পর্যন্ত যাওয়ার পথ সম্পর্কে পরিচিত থাকুন। আক্রমণের বাস্তব সম্ভাবনা ঘটলে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করুন এবং ঘটনাস্থলে যতটুকু সময় থাকা একান্ত জরুরি ততটুকুই থাকুন।
  • ঘটনাস্থলের ভিতরে সাংবাদিকদের জন্য নির্দিষ্ট স্থান থেকেই খবর সংগ্রহ করুন যদি না অন্যভাবে কাজ করা নিরাপদ হয়। আপনি বিপদে পড়লে নিরাপত্তারক্ষী বা পুলিশের সাহায্য পাবেন কি না তা অনুধাবন করুন এবং বেরোবার পথ দেখে রাখুন।
  • যদি জনতা / বক্তাগণ সংবাদমাধ্যমের প্রতি বিরোধীভাবাপন্ন হন তবে গালাগালি শোনার জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত থাকুন। এই পরিস্থিতিতে শুধুমাত্র নিজের কাজটুকু করুন এবং প্রতিবেদন করুন। গালাগালির প্রতিক্রিয়া দেখাবেন না। জনতার সঙ্গে বাগবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়বেন না। মনে রাখবেন, অন্যেরা না হলেও আপনি একজন পেশাদার কর্মী।
  • যদি জনতার থেকে থুতু ছেটানো বা ছোটখাট ইটপাথর ছোড়ার সম্ভাবনা থাকে এবং আপনি সংবাদ সংগ্রহ করতে বদ্ধপরিকর থাকেন তবে একটি হুড দেওয়া, জলরোধী, শক্তপোক্ত টুপি পড়ুন।
  • যদি কাজটি কঠিন হয়ে থাকে আপনার আবেগ গোপন রাখবেন না। আপনার উর্ধ্বতন কর্মী ও সহকর্মীদের জানান। তাঁদের প্রস্তুত থাকা এবং একে অন্যের থেকে শেখা গুরুত্বপূর্ণ।
 প্রতিবাদ আন্দোলন

প্রতিবাদ আন্দোলনের খবর করার সময় ঝুঁকি ন্যূনতম করতে:

  • কাজটি সম্পর্কে পরিকল্পনা করুন এবং আপনার মোবাইল ফোনের ব্যাটারি সম্পূর্ণ চার্জযুক্ত থাকা নিশ্চিত করুন। গন্তব্যস্থল সম্বন্ধে জানুন। আগে থেকেই ভেবে রাখুন সংকটের সময় কী করবেন। ব্যবহার করতে জানলে চিকিৎসা সরঞ্জাম সঙ্গে রাখুন।
  • সর্বদা চেষ্টা করুন কোন সহকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে এবং আপনার নিয়োগস্থলের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়মিত পরীক্ষা করুন, বিশেষত যদি সমাবেশ বা জনাকীর্ণ ঘটনাস্থলে প্রতিবেদন করতে হয়।
  • এমন পোশাক ও জুতো পড়ুন যাতে দ্রুত চলাফেরা করতে পারেন। ঢিলেঢালা পোশাক ও গলায় ঝোলানো দড়ি, যা ধরে টানা যায় এবং নাইলনের মতো সহজদাহ্য কাপড়ের পোশাক পরিহার করুন।
  • নিজের অবস্থান বিবেচনা করুন। যদি পারেন, কোন উঁচু ও সুবিধাজনক স্থান খুঁজুন যা আপনাকে অধিকতর নিরাপত্তা দেবে।
  • যে কোনো ঘটনাস্থলে সরে পড়ার রাস্তা ভেবে রাখুন এবং অন্যদের সঙ্গে মিলিতভাবে কাজ করলে একটি সংকটকালীন মিলনস্থল ঠিক করে রাখুন। নিকটতম চিকিৎসা সহায়তা কেন্দ্র জেনে রাখুন।
  • সর্বদা পরিস্থিতি সম্পর্কে সজাগ থাকুন এবং সীমিত সংখ্যক মূল্যবান সামগ্রী কাছে রাখুন। কোন যন্ত্রপাতি গাড়িতে রাখবেন না যা ভাঙ্গার সম্ভাবনা থাকবে। সন্ধ্যার পর অপরাধ সংক্রান্ত ঝুঁকি বাড়ে।
  • জনতার ভিড়ে কাজ করতে হলে একটি কৌশল পরিকল্পনা করুন। বুদ্ধিমানের কাজ হবে যদি ভিড়ের বাইরে থাকা যায় এবং মাঝখানে আটকে পড়তে না হয় যেখান থেকে পালানো কঠিন হবে। একটি পলায়ন পথ দেখে রাখুন এবং দলের সঙ্গে মিলিতভাবে কাজের সময় একটি সংকটকালীন মিলনস্থল ঠিক করে রাখুন।
  • চিত্র সাংবাদিকদের সাধারণত ঘটনার মধ্যে থেকে কাজ করতে হয়, তাই তাঁদের ঝুঁকি বেশি থাকে। চিত্রগ্রাহকদের, বিশেষ করে পিছন থেকে নজর রাখার জন্য কারো থাকা উচিত এবং তাঁদের নিজেদেরও কয়েক সেকেন্ড পর পর ক্যামেরার ভিউ ফাইন্ডার থেকে চোখ সরিয়ে চারপাশ দেখা উচিত। ফাঁস লেগে যাওয়ার ঝুঁকি এড়াতে ক্যামেরার ফিতে গলায় ঝুলিয়ে রাখবেন না। চিত্র সাংবাদিকদের দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করার সুযোগ প্রায় হয়েই ওঠে না, তাই ভিড়ের মধ্যে যথাসম্ভব কম সময় কাটানো গুরুত্বপূর্ণ। ছবি তুলেই সরে পড়ুন।
  • সব সাংবাদিকের সচেতন থাকা উচিত যে, এমন জনতার ভিড়ে অধিক সময় থাকবেন না যা হঠাৎ প্রতিকূল হয়ে উঠতে পারে।
  • কাশ্মীরে প্রতিবাদীদের দমন করতে ভারতীয় পুলিশ আগুন, রবারের গুলি ও ছররা বন্দুক ব্যবহার করেছে। নিজস্ব সুরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবহার করুন, কিন্তু তা যথাযথ না হলে পুলিশের দিকে মনোনিবেশ করুন। যদি আগ্নেয়াস্ত্র দেখা যায় ঘেরা জায়গায় চলে যান এবং হুড়োহুড়ির সময় স্বাভাবিক বহির্পথে থাকবেন না।

কাঁদানে গ্যাস প্রয়োগের সময় ঝুঁকি কমাতে:

  • ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম পরিধান করা উচিত যার মধ্যে আছে গ্যাস মুখোশ, চোখের ঢাকা, দেহবর্ম ও শিরস্ত্রান।
  • হাঁপানি বা শ্বাসের সমস্যাযুক্ত ব্যক্তিদের সেই সব স্থান এড়িয়ে চলা উচিত যেখানে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করা হচ্ছে। সেই রকমই, কন্ট্যাক্ট লেন্স ব্যবহার করা উচিত নয়। যদি বেশি মাত্রায় কাঁদানে গ্যাস প্রয়োগ করা হয় তবে বায়ুচলাচলহীন স্থানে ঘন মাত্রায় গ্যাস থেকে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে।
  • কোন সম্ভাব্য ল্যান্ডমার্ক, যেমন খুঁটি, পথের বাঁক চিহ্নিত করে রাখুন যাতে দেখতে অসুবিধা হলেও তা আপনাকে পথ দেখায়।
  • যদি কাঁদানে গ্যাসের মধ্যে পড়ে যান, কোন উচ্চ স্থান খুঁজতে চেষ্টা করুন এবং মুক্ত বাতাসে দাঁড়ান যাতে হাওয়ায় গ্যাস চলে যায়। চোখ বা মুখ ঘষবেন না, তাতে পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে। যেইমাত্র সম্ভব হবে ঠান্ডা জলে গা থেকে গ্যাস ধুয়ে ফেলুন, কিন্তু স্নান করবেন না। পোশাক থেকে দানা সম্পূর্ণ পরিষ্কার করতে বেশ কয়েকবার ধোওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।

 ভারতে সাংবাদিকরা প্রতিবাদীদের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রমণ মোকাবিলায় নিম্নলিখিত উপায়গুলি অবলম্বন করুন:

  • কোন ভিড়ের মধ্যে প্রবেশের আগে সাংবাদিকদের প্রতি প্রতিবাদীদের মনোভাব নিরূপণ করুন এবং সম্ভাব্য আততায়ীদের দিকে লক্ষ্য রাখুন।
  • দেহভাষা থেকে আক্রমণকারীকে শনাক্ত করুন এবং পরিস্থিতি শান্ত করতে নিজের দেহভাষা ব্যবহার করুন।
  • আক্রমণকারীর চোখে চোখ রাখুন, হাত খোলা রাখুন এবং শান্তভাবে কথাবার্তা চালান।
  • আক্রমণকারীর থেকে পুরো এক হাত দূরত্বে থাকুন। যদি আটকে পড়েন আক্রমণ না করে দৃঢ়ভাবে পিছিয়ে আসুন এবং সরে পড়ুন। যদি কোণঠাসা হয়ে পড়েন ও বিপদ বোঝেন, চিৎকার করুন।
  • যদি আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়তে থাকে, মাথা বাঁচাতে একটি হাত মুক্ত রাখুন এবং পতন এড়াতে ছোট ছোট সুচিন্তিত পদক্ষেপে নড়াচড়া করুন। যদি দলের মধ্যে থাকেন, সকলে কাছাকাছি থাকুন এবং হাতে হাত ধরে থাকুন।
  • এমন সময় আসতে পারে যখন আগ্রাসন নথিভুক্ত করা সাংবাদিকের কাছে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হতে পারে। পরিস্থিতি ও নিজের সুরক্ষা সম্পর্কে সজাগ থাকুন। আক্রমণকারী ব্যক্তির ছবি তুললে পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়ে উঠতে পারে। 
  • আক্রান্ত হলে আততায়ী যা চায় দিয়ে দিন। যন্ত্র আপনার জীবনের মত মূল্যবান নয়।

 শারীরিক সুরক্ষা: বিরোধী জনগোষ্ঠীর মধ্যে খবর করার সময় সুরক্ষা বিধি

সাংবাদিকদের মাঝে মাঝেই সংবাদমাধ্যম ও বহিরাগতদের প্রতি বিরোধীভাবাপন্ন স্থানে বা সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রতিবেদন করতে হয়। এরকম ঘটতে পারে যদি কোন সম্প্রদায় মনে করে যে সংবাদ মাধ্যম যথাযথভাবে তাদের প্রতিনিধিত্ব করেন না বা তাদের সম্পর্কে নেতিবাচক প্রতিবেদন করে। নির্বাচনের প্রচারের সময় সাংবাদিকদের দীর্ঘ সময় ধরে এমন সম্প্রদায়ের মধ্যে কাজ করতে হয় যারা সংবাদমাধ্যম বিরোধী।

 ঝুঁকি কমাতে যা সাহায্য করবে:

  • যদি সম্ভব হয়, সম্প্রদায়টি ও তাদের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে গবেষণা করুন। সংবাদ মাধ্যমের প্রতি তাদের প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে তা বুঝে নিন এবং প্রয়োজন হলে নম্র হাবভাব নিয়ে চলুন।
  • সংবাদ মাধ্যম সংস্থার ছাপ দেওয়া পোশাক পড়বেন না এবং প্রয়োজন হলে যন্ত্রপাতি / গাড়ি থেকে সংবাদমাধ্যমের লোগো সরিয়ে ফেলুন। যথাযথ পোশাক ও জুতো পড়ুন। 
  • ব্যবহার করতে জানলে চিকিৎসা সরঞ্জাম সঙ্গে রাখুন।
  • সম্প্রদায়টির কাছে স্বাগত হওয়া নিশ্চিত করুন। বিনা আমন্ত্রণে বা অন্যের কথায় সেখানে গিয়ে পড়লে সমস্যা হতে পারে। কোন স্থানীয় মধ্যস্থতাকারী ব্যক্তি, ওই সম্প্রদায়ের নেতৃস্থানীয় কেউ বা সম্মানীয় কোন ব্যক্তি যিনি আপনার কাজের সমন্বয় সাধন করতে পারবেন তাঁকে নিযুক্ত করুন বা তাঁর সম্মতি নিন।
  • সর্বদা ব্যক্তি ও তাঁর বিশ্বাস / ভাবনার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকুন।
  • রাত্রে কাজ করা এড়িয়ে চলুন: নাটকীয়ভাবে ঝুঁকি বেড়ে যায়।
  • সম্প্রদায়টির মধ্যে যদি মদ ও মাদক ব্যবহারের অভ্যাস থাকে তবে অনিশ্চয়তা বেড়ে যায়।
  • মূল্যবান সামগ্রী বা অর্থ সীমিত পরিমানে সঙ্গে রাখুন। চোরেরা কি আপনার যন্ত্র দেখে আকৃষ্ট হবে? যদি আক্রান্ত হন, তারা যা চায় দিয়ে দিন। যন্ত্র আপনার জীবনের মত মূল্যবান নয়।
  • আদর্শ হলো দলবদ্ধভাবে কাজ করা বা সহায়ক দল রাখা। ঝুঁকির মাত্রা অনুযায়ী, সহায়ক দল কাছাকাছি কোনো নিরাপদ স্থানে (শপিংমল বা পেট্রল পাম্প) অপেক্ষা করতে পারে যাতে প্রয়োজনে কাজে লাগে।
  • আপনার পরিদর্শনের পরিকল্পনা করে রাখুন। স্থানটির ভৌগোলিক চেহারা সম্পর্কে ভাবুন এবং সেই মত পরিকল্পনা করুন।
  • আপনার গাড়ি বেরোবার জন্য তৈরি অবস্থায় রাখুন, ভাল হয় যদি চালক গাড়িতে থাকেন।
  • যদি গাড়ি থেকে দূরবর্তী জায়গায় আপনাকে কাজ করতে হয়, জেনে রাখুন কীভাবে সেখানে ফিরে যাবেন। কয়েকটি ল্যান্ডমার্ক চিহ্নিত করে রাখুন এবং সেই তথ্য সহকর্মীদের জানান।
  • জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসার প্রয়োজন হলে কোথায় যেতে হবে জেনে রাখুন এবং নিষ্ক্রমনের কৌশল ঠিক করে রাখুন।
  • যদি ঝুঁকি খুব বেশি থাকে তবে নিরাপত্তারক্ষীর প্রয়োজনীয়তার কথা ভাবতে পারেন। যখন আপনি কাজে মন দেবেন তখন পিছন থেকে আপনার ও আপনার সরঞ্জামের ওপর নজর রাখার জন্য স্থানীয় কাউকে ভাড়া করা বাড়তি ঝুঁকির সঙ্গে মানানসই হবে।
  • কোন ব্যক্তির চিত্র বা চলচ্চিত্র গ্রহণের আগে তার সম্মতি নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ, বিশেষত যদি আপনার বেরোবার পথ সহজ না হয়।
  • আপনার প্রয়োজনীয় বিষয় পেয়ে গেলে প্রয়োজনের অতিরিক্ত সময় না কাটিয়ে বেরিয়ে পড়ুন। শেষ করার সময়টা আগে থেকে ঠিক করে রাখা এবং ঠিক সেই সময় বেরিয়ে পড়া ভাল হবে। যদি দলের কোন সদস্য অস্বস্তি বোধ করেন, আলোচনা করে সময় নষ্ট করবেন না। শুধু স্থানত্যাগ করুন।
  • সম্প্রচার / প্রকাশনার আগে বিবেচনা করুন যে সেই স্থানে আবার আপনার যাওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। আপনার পরিবেশনের পর কি সেখানে আপনি স্বাগত হবেন?
৭ নভেম্বর, ২০২৩ ভারতের মনিপুর রাজ্যের ইমফলে প্রতিদ্বন্দ্বী জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে মারামারির নতুন ঘটনার পর মেইতেই সম্প্রদায়ের অধিবাসীরা সেনাবাহিনীর একটি গাড়িকে গুলিবর্ষণের স্থানে যাওয়া থেকে বিরত করছে। রয়টার / স্ট্রিনজার

 মানসিক সুরক্ষা: সংবাদ কক্ষে মানসিক আঘাত নিয়ন্ত্রণ

 প্রতিবেদন ও পরিস্থিতি থেকে উদ্ভুত মর্মপীড়া এবং যখন মানসিক আঘাত সম্পর্কে আপনার চিন্তা করা উচিত তার মধ্যে আছে:

  • হিংসার রেখাচিত্র (মৃত্যু, অপরাধ দৃশ্য, মৃত্যুর সঙ্গে যুদ্ধ)
  • বড় মাপের দুর্ঘটনা বা দুর্যোগ (ট্রেন / গাড়ি / প্লেন দুর্ঘটনা)
  • অপমানের ঘটনা, বিশেষত শিশু ও বয়স্কদের সঙ্গে
  • কোন পীড়াদায়ক ঘটনা যার সঙ্গে কর্মীর ব্যক্তিগত যোগ রয়েছে
  • যখন কোন অনভিজ্ঞ কর্মী প্রথমবার এই ধরনের বিষয়ের মুখোমুখি হন।

কর্তৃপক্ষের উচিত এই সময় কর্মীদের পথ দেখানো এবং তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব নেওয়া। নিম্নলিখিত পন্থা অবলম্বন করে প্রয়োজনে সেই অনুযায়ী কাজ করা উচিত। ঘটনার তীব্রতার উপর নির্ভর করছে এই নির্দেশিকা কতটা অনুসরণ করতে হবে।

 এই সময়ে:

  • কর্মীদের মধ্যে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দায়িত্ব দিন যাতে একই প্রযোজক দিনের পর দিন কঠিন বিষয়ে নিযুক্ত না থাকেন।
  • নিশ্চিত করুন যে দলের সদস্যরা জ্ঞাত আছেন যে, তাঁদের কাছে পীড়াদায়ক বিষয়ের দায়িত্ব নেওয়া তাঁরা অস্বীকার করতে পারেন। কঠিন বিষয় সামলানো প্রসঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করতে কর্মীরা যেন সমর্থ হন এবং অতিরিক্ত কোন প্রশ্ন না করে যেন ব্যাপারটি সংবেদনশীলতা ও বিচক্ষণতার সঙ্গে সামলানো হয়। ভিডিওগ্রাফির দায়িত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে এটি বিশেষভাবে পালন করতে হবে।
  • নিশ্চিত হন যে আপনার দলের সদস্যরা সম্পাদনার কাজের মধ্যে অবসর পান এবং কঠিন বিষয়ে কাজ করার সময় মুক্ত বাতাস পান।
  • শুরুতে ও মাঝে মাঝেই জানতে চান যে তাঁরা ঠিক আছেন কিনা এবং সেটি শুধুমাত্র লিখিত বার্তার মাধ্যমে নয়। আপনার কর্মীদের সঙ্গে দিনে অন্তত একবার বা দুবার মুখোমুখি কথা বলুন যাতে তাঁরা নিশ্চিত হন যে কথা বলার জন্য আপনাকে পাওয়া যাবে। কর্মীদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে উৎসাহ দেওয়া উচিত।
  • যদি আপনার দল এই বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত না হয়, উদারভাবে তাঁদের অন্য দলকে সাহায্য করতে দিন, বিশেষত মানসিক চাপের সময়।
  • বিশেষত চাপের দিনগুলিতে নিশ্চিত করতে চেষ্টা করুন যে কর্মস্থল পরিত্যাগের আগে প্রত্যেক কর্মী যেন কাজের একটি বিবরণ দেন।
  • আলোচনার সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যানেজারের স্বীকার করা উচিত যে, এই বিষয়ে কাজ করলে মানসিক চাপ অনুভূত হতে পারে এবং তা স্বাভাবিক ও স্বল্পমেয়াদি। কর্মীরা প্রভাবিত হলে তাঁদের উচিত কোন ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলা। সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বললেও উপকার হতে পারে।
  • যদি তাঁরা কোন নিরপেক্ষ উপদেষ্টার সঙ্গে একান্তে কথা বলতে চান, কোন কর্মী সহায়তা কর্মসূচি (ই এ পি) বা পরামর্শদাতা আছেন কি যাঁর সঙ্গে কথা বলা যাবে?

মানসিকসুরক্ষাঃমানসিক আঘাতজনিতচাপসামলানো

পীড়াদায়ক ঘটনার প্রতিবেদনকারী সাংবাদিকদের ক্ষেত্রে পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার (পি টি এস ডি) (মানসিক আঘাত পরবর্তী চাপজনিত বৈকল্য) একটি ক্রমবর্ধমান সমস্যা হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে।

ঐতিহ্যগতভাবে, বিবাদস্থলে বা মৃত্যুর মুখোমুখি হয়ে বা অত্যন্ত ভীতিজনক অবস্থায় কর্মরত সাংবাদিক ও সংবাদ মাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে সমস্যাটি সম্পর্কিত। ইদানিং কালে দেখা যাচ্ছে পীড়াদায়ক ঘটনার প্রতিবেদনকারী সাংবাদিকরা পি টি এস ডি-র লক্ষণ অনুভব করতে পারেন। গালাগালি বা হিংসা (অপরাধ দৃশ্যের প্রতিবেদন, ফৌজদারি আদালতের মামলা বা ডাকাতি) বা প্রচুর জীবনহানির ঘটনা (গাড়ি দুর্ঘটনা / খনি দুর্ঘটনা) সবই প্রতিবেদনকারী সাংবাদিকদের ওপর মানসিক আঘাতের সম্ভাব্য কারণ। যাঁদের অনলাইন গালিগালাজ বা ট্রোল করা হয় তাঁরা চাপজনিত মানসিক আঘাতের শিকার হতে পারেন।

সেন্সরবিহীন বিষয়বস্তু ডিজিটাল জগতে সামনের সারিতে চলে এসেছে। এখন লক্ষ করা যাচ্ছে, মৃত্যু ও বীভৎসতার চিত্রাবলী দেখা সাংবাদিক ও সম্পাদকরা মানসিক আঘাতে আক্রান্ত হচ্ছেন। এই দ্বিতীয় শ্রেণীর মানসিক আঘাতকে বলা হয় অপ্রত্যক্ষ মানসিক আঘাত।

 সব সাংবাদিকের বোঝা জরুরি যে ভীতিপ্রদ ঘটনা / ছবি দেখে মানসিক চাপ অনুভব করা একটি সাধারণ মানবিক প্রতিক্রিয়া। এটি কোন দুর্বলতা নয়।

প্রত্যেকের জন্যঃ

  • এই বিষয়ে কথা বলুন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে সবচেয়ে কনিষ্ঠ প্রযোজক সকলেই কঠিন পরিস্থিতি, রেখাচিত্র বা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক পরিস্থিতিতে প্রভাবিত হন। আপনার ম্যানেজার বা অন্য কোন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলুন, পাশে বসা ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলুন। নীরবে কষ্ট পাবেন না।
  • মনে রাখবেন, ভিডিওর মাঝখানে, কোন বিশেষ প্রতিবেদন থেকে বা ঘটনাস্থলে কাজ করার সময় অবসরের প্রয়োজনীয়তার কথা বললে আপনার পেশাগত উন্নতি থমকে যাবে না।
  • ঘুমোতে যাওয়ার আগে ঘটনার চিত্ররূপ দেখবেন না এবং একটি কঠিন কর্মদিবসের পর বাধা কাটাবার জোরালো চেষ্টা করবেন না। ঘুম ব্যাহত হলে ক্ষতিপূরণ পদ্ধতি বিঘ্নিত হতে পারে।
  • ব্যায়াম ও ধ্যান এক্ষেত্রে আপনার বন্ধু, যেমন স্বাস্থ্যকর খাদ্য ও যথেষ্ট জলপান।
  • মনে রাখবেন পীড়াদায়ক হওয়ার জন্য ভিডিওটি গ্রাফিক হওয়া প্রয়োজন নেই। রক্ত ও হিংসা সম্বলিত চলচ্চিত্র সম্পর্কে বিশেষ যত্ন নেওয়া প্রয়োজন কিন্তু আবেগপূর্ণ সাক্ষ্যও কষ্টদায়ক হতে পারে, যেমন হতে পারে গালিগালাজের ভিডিও। বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন বিষয়কে কঠিন বা পীড়াদায়ক মনে করতে পারেন, তাই বিচক্ষণ হন।
  • যদি সপ্তাহান্তেও কাজ করে থাকেন অথবা দিনের পর দিন সম্পাদনায় বা ঘটনার স্থলে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করে থাকেন তবে আপনার ক্ষতিপূরণমূলক ছুটি নিয়ে নিন। অন্তত তার মধ্যে কয়েকটি দিন খুব তাড়াতাড়ি নিন, কারণ ওই সময়টা কাটানো আপনার স্বাভাবিক হয়ে ওঠার জন্য প্রয়োজন।

 সম্পাদনা কর্মীদের জন্যঃ

  • যতটা দেখা প্রয়োজন তার বেশি দেখবেন না। কিছু বিরক্তিকর ছবি সম্প্রচার করা প্রয়োজন হতে পারে, কিন্তু সেগুলি দেখবেন না কারণ আপনার মনে হতে পারে যে আপনার নিজেকে প্রমাণ করা প্রয়োজন। আপনার ঊর্ধ্বতন কর্মী বা ম্যানেজারের সঙ্গে আগেই আলোচনা করুন কীভাবে ছবি ব্যবহার করবেন যাতে সম্পাদনার জন্য আপনাকে বার বার দেখতে না হয়।
  • আপনার কর্মকর্তা, একজন ম্যানেজার বা আইনি পরামর্শদাতাকে কোন বিশেষ চিত্র বা পীড়াদায়ক ভিডিও দেখাবার আগেই সতর্ক করে দিন তারা কী দেখতে যাচ্ছেন। উদাহরণ স্বরূপ, “আমার ভিডিও দেখতে আপনাদের আপত্তি আছে” না বলে বলুন “কোন হিংসাত্মক আক্রমণের পরিণাম প্রদর্শনকারী একটি ভিডিও দেখতে কি আপনার আপত্তি আছে?” কী আসতে চলেছে তা না জানলে চিত্রবিবরণ সর্বদাই উল্লেখযোগ্য ভাবে বেশি আপত্তিকর মনে হতে পারে।
  • একটি কর্মসূচি তৈরি করুন। বিশেষ কঠিনগ্রাহ্য কিছু দেখার আগে দুই পা শক্ত করে মেঝেতে রাখা, স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি গভীরভাবে শ্বাস নেওয়া এবং কাজের পর শরীর টানটান করার মত সহজ কিছু অভ্যাস করুন। যে কর্মসূচি আপনার কাজে লাগে তা বেছে নিন।
  • যদি আপনার হাতে এমন কোন প্রকল্প থাকে যাতে দৈনিক একটানা কঠিনগ্রাহ্য ছবি দেখতে হয় তবে সে ব্যাপারে আলোচনা করুন। আপনার ওপর এর সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে সচেতন থাকুন এবং ওই কাজের সময় কীভাবে নিজের যত্ন নেবেন তা স্পষ্টভাবে ভেবে নিন।

 ঘটনাস্থলে কর্মরতদের জন্যঃ

  • মনে রাখবেন, পীড়াদায়ক ঘটনার প্রতিবেদন করার সময় প্রতিবিধান করতে পারছেন না বলে অসহায় ও হতাশ বোধ করা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। আপনার সহকর্মীদের সঙ্গে বা যাঁর সঙ্গে কথা বললে আপনি আরাম বোধ করেন তাঁকে বিষয়টি জানান। এড়িয়ে না গিয়ে বিষয়টি নিয়ে কথা বলা চাবিকাঠি হতে পারে।

 যদি অভিঘাত বিশেষ তীব্র হয়ঃ

  • ঘটনার অব্যবহিত পরে পীড়াদায়ক ছবি মনে পড়া, ছটফট করা বা উদ্বিগ্ন হওয়া স্বাভাবিক। অনুভূতি স্বীকার করে নেওয়া, স্বল্প সময়ের জন্য হলেও বিরতি নেওয়া সহায়ক হবে।
  • ঘটনার কিছুদিন বা কয়েক সপ্তাহ পরেও যদি সেই অনুভূতি দূর না হয়, ঊর্ধ্বতন কর্মীদের বা তা জানানো উচিত। যদি দুঃসহ মনে হয় তবে শীঘ্র সাহায্য নেওয়া ভাল। 

সাংবাদিকদের সহায়তার প্রয়োজন হলে [email protected]-র মাধ্যমে সিপিজে এমার্জেন্সিস-এর সঙ্গে বা [email protected]-র মাধ্যমে ভারতে সিপিজে-র প্রতিনিধি কুনাল মজুমদারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। নির্বাচনকালীন সাংবাদিক সুরক্ষা বিষয়ে আরো তথ্যের জন্য দেখুন সাংবাদিক সুরক্ষা: নির্বাচন